বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৩

শ্রাবণ রজনী শেষে


ব্যালকনির পাশে একটা নারকেল গাছ দাঁড়িয়ে। বাড়ির অন্য গাছগুলোর চাইতে এই গাছটা তুলনামুলক খাঁটো। মৃদু শব্দে নারকেল পাতারা ঝিরঝিরিয়ে দোল খাচ্ছে। চিকন-লম্বা পাতাগুলোর শেষ প্রান্ত বেয়ে টপটপ করে পানি গড়িয়ে পড়ছে। কয়েকটা ফোঁটা উড়ে এসে ইভানার চেহারায় জলজ তিলক পরিয়ে দিল। ও বসে ছিল তৃতীয় তলার বেলকনিতে। শ্রাবণের শেষ বৃষ্টি একটু আগেই ঝরিয়ে দিয়ে গেছে প্রকৃতি। আরও একটা বর্ষা পেরিয়ে গেল। একটু পরেই শরতের প্রথম ভোর। সারাটা রাত নির্ঘুম কাটিয়ে ইভানা ঢুলুঢুলু চোখ নিয়ে উঠে গেল স্টাডি রুমের দিকে।
আলমিরা থেকে বহুদিনের অব্যবহৃত পুরানো ডায়েরিটা বের করল। টেবিল ল্যাম্পটা জ্বেলে একটা চেয়ার টেনে বসল। পাকায় ঘষা লেগে শুকনো কাঠ ক্যাচ্... শব্দ ছড়িয়ে আর্তনাদ করে উঠে। ইভানা এই আওয়াজটার সাথে খুব পরিচিত। ও একেবারেই সহ্য করতে পারেনা। শরীর শিরশির করে তার এই আওয়াজ কানে গেলে। আজও ব্যতিক্রম হলনা। একটা বাজে শব্দ। দাঁতে দাঁত চেপে কটকট শব্দ তুলছে সে। অনেকদিন পর আজ সে একটা চিঠি লিখবে। রাসেলকে। কতো-দিন হলো চিঠি লেখেনা। ডায়েরির সব ক'টা পাতা হলদেটে রূপ ধারণ করেছে। খসখসে পাতাগুলো তার দিকে উৎসুক নয়নে তাকিয়ে আছে তৃষ্ণার্ত হয়ে। তার লেখনির আঁচড়ে যেন একটু খানি মসির পরশ অতৃপ্ত কাগজের পিয়াস মেটায়.. 
শেষ প্রহর।১৯শে আগস্ট, ২০১৩ খ্রীঃ




0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন