শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৩

কতটুকু বঞ্চনার পর একটি ভালো মেয়ে- একটা নষ্টা কলগার্ল হতে পারে!!! কিন্তু তাঁরাও তো এই সমাজেরই একটা অংশ... তোমাদের জন্য শুধুই দুঃখ... :|| :|| :||

প্রথম প্রকাশ : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪২ |
সামহোয়্যারইন ব্লগ



মানুষ যে কত নিষ্ঠুর হতে পারে- তার কিছুটা অনুমান করতে পারলাম। গতকাল রাতে এবিসি রেডিও-তে "জীবনের গল্প" নামে একটা অনুষ্ঠান হয়েছিল। আগন্তুক অতিথি বর্ষা (ছদ্ধ নয়, আসল নাম), একজন কলগার্ল। তিনি তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া ব্যথাতুর অধ্যায় গুলোর বর্ণনা দিয়েছেন। সংক্ষিপ্ত তুলে ধরলাম (আনফরচুনেটলী আপনি যদি কাল রাতের ইপিসোডটি মিস করে থাকেন- তাহলে আপনার জন্য)।


বর্ষার বর্তমান বয়স ২৩ বছর। গ্রামের বাড়ী বরিশাল জেলায়। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে বসবাস। ছোট বেলায় সে খুব চঞ্চল প্রকৃতির ছিলো। তাঁর যখন ৪ বছর বয়স. তখন তার ছোট খালার বিয়ে হয়। তার ছোট খালাও ঢাকাতেই থাকতো। সে যখন ক্লাস ফাইভে পড়ে। কৈশরে। এলাকার ছেলেরা একটু আধটু দিষ্টার্ব করতে থাকে। এবং এই সময়টায় তার ও তার ছোট খালার মাঝে তুই সম্বোধনের সম্পর্ক তৈরি হয়। এদিকে তার ছোট খালার কোনও বাচ্চা হচ্ছিল না। কারণ বর্ষার বাবার অপকর্মের কারণে প্রেগন্যান্ট হওয়ায় অপারেশনের পর তার ছোট খালা চিরতরে মা হবার যোগ্যতা হারান। এমনই সময় তার খালারা ঢাকা ছেড়ে চট্টগ্রামে চলে যায়। এবং বর্ষার খালার পীড়াপীড়িতে তার বাবা তাকে তার খালার কাছে পালক মেয়ে হিসাবে তুলে দেয়....

....কয়েক বছর পর। তখন বর্ষা তার খালাদের সাথে চট্টগ্রামে থাকে। একদিন সে জানতে পারে- তাকে নিয়ে আসার পেছনে আরও একটা কারণ আছে। শুধু লেখাপড়া করা আর সন্তান হিসাবেই তাকে আনা হয়নি। বরং তার ছোট খালার একটা বাচ্চা দরকার। এবং সেই বাচ্চাটার বাবা হবে বর্ষার খালু। আর গর্ভে ধারণ করবে বর্ষা নিজে। এবং আরও জানে- তার বাবার কারণে আজ তার খালা বাচ্চা ধারণ করতে অক্ষম। এইসব শুনে সে ভয় পেয়ে যায়। সে ঢাকা চলে আসে.....

....মায়ের কাছে সব খুলে বলে। তার বাবা এসব শুনে বিশ্বাস না করার ভান করে। এবং নির্ধারিত দিনে তাকে নেওয়ার জন্য তার খালু আসে। তখন সে সুইসাইড করার জন্য ফার্মেসী থেকে শক্তিশালী ১০টি ঘুমের ট্যাবলেট কিনে বাসায় এনে খায়। এবং কিছুক্ষণ পর অজ্ঞান হয়ে যায়। যদিও ডাক্তারের কথা অনুযায়ী তার মরে যাওয়ার কথা। আশ্চর্য- এই ঘুমের মাঝেই তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। একদিন পর তার ঘুম ভাঙ্গলে সে নিজেকে চট্টগ্রামে আবিষ্কার করে। এবং রীতিমত ভয় পায়। তবুও কিছু বলার সাহস পায় না.....

....কিছু দিন যাবৎ সে লক্ষ্য করছে- তার খালু (এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও একজন হাজী মানুষ হয়েও) ড্রিংক্স করে বাসায় ফেরে। সে অবাক হয়। একদিন তার খালা বলে- একা একা খেয়ে আস কেন? বাসায় নিয়ে আসবে। আমরাও খাবো.....

....তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও তারা তাকে জোর করে ড্রিংক্স করায়। একদিন এভাবেই অচেতন অবস্থায় তাকে তার খালু ধর্ষণ করে। কিন্তু সে জানতে পারে না। এবং বাসায় ড্রিংক্স করাও বন্ধ হয় (কারণ যা হবার তা তো হয়েই গেছে।).....

.....সে অন্তসত্তা হয়ে পড়ে। এবং ৩ মাসের সময় তার খালু তার কাছে নিজের অপরাধ স্বীকার করে। কিন্তু সে আত্মহত্যা ও এলাকার সবাইকে বলে দেওয়ার হুমকি দিলে তার খালু তাকে বাচ্চা নষ্ট করার ঔষধ কিনে দেয়। কিন্তু তাতে কাজ হয় না। কারণ ৫ মাসের বেশী হয়ে গেছে। তার বিভিন্ন হুমকির পর তার ছোট খালা অন্য এক মহিলার মাধ্যমে এক ক্লিনিকে নেওয়ায়। সেখানে তাকে নরমালি ডেলিভারী হবার ইনজেক্শান দেওয়া হয়। ইতোমধ্যেই তার জর আসে। কিন্তু ২৪ ঘন্টা পরও ডেলিভারী না হওয়ায় তার বাচ্চাটাকে কেটে কেটে (কারণ বাচ্চা বড় হয়ে গিয়েছিল) বের করা হয়।....

.....৭ মাস পর। সে ঢাকায় আসে। তার মাকে সব বলে। এবং দোষারোপ করে। তার মা আর তাকে তার খালার কাছে যেতে দেয় না। তার বাবা অনুতপ্ত হয়। .....

..... তার মা তাকে সান্তনা দিয়ে এক্সিডেন্ট মনে করে ভুলে যেতে বলে। তাকে আগের মতো পড়ালেখা করতে বলে। ও.. হ্যাঁ. আগে বলা হয় নি। বর্ষার বাবার আগের স্ত্রী অর্থাৎ বর্ষার সৎ মা ছিল। একদিন সৎ মা তাকে চাকুরী দেবার কথা বলে ওখানের চেয়ারম্যান এর কাছে নিয়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য- তার সৎ মা চেয়ারম্যানের কাছে পাশের ফ্ল্যাটের মেয়ে বলে পরিচয় দেয়। চেয়ারম্যান তাকে এ্যাডভান্স হিসেবে ১০ হাজার টাকা দেয়। এবং তাকে কর্মস্থল দেখানো কথা বলে কক্সবাজার নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে সে দ্বিতীয় বারের মত সব কিছু হারায়। এবং ঢাকা চলে আসে। তার মা এই জানতে পেরে তাকে চরম তিরষ্কার করে। বাড়ী থেকে বের হয়ে যেতে বলে।কাহিনীর শুরু এখান থেকেই....................... বাকীটা ডাউনলোড করতে নিচে দেখুন।

এখন তার প্রতিদিন ইয়াবা সেবনে ব্যয় হয় সর্বনিম্ন ৩০০০ টাকা। আরো কত কী।

............ যতটুকু লিখেছি- অসম্পূর্ণ ও খুবই সংক্ষিপ্ত। অনেক কিছু এড়িয়ে গিয়েছি। অনেকটাই চেপে গেছি। বর্ষা এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায়। কিন্তু পারছে না। আমার কেন যেন মনে হয় তার কোনও দোষ নেই। অপরাধ ছিল তার বাবার। তার সৎ মায়ের। তার খালা-খালুর। অপরাধ এই সমাজের।.....

.....না. আর নয়. আমি আর লিখতে পারছি না.... আমার লেখনী থেমে গেছে.... আর কিছু ভাবতেও পারছি না। .....

যদি কেউ তাঁর সম্পর্কে জানতে চান, জানতে চান তাঁর জীবনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সকল অধ্যায়। তাহলে নিচের লিংক থেকে (১ ও ২ পর্ব) ডাউনলোড করে নিন।

***বর্ষার জীবনের গল্প তাঁর মুখে শুনতে ডাউনলোড করুন***
বর্ষার জীবন কাহিনী- পর্ব-১
বর্ষার জীবন কাহিনী- পর্ব-২

অথবা নিচের লিংক অনুসরণ করুন--
"জীবনের গল্প"

1 মন্তব্য: