বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৩

কওমি মাদ্রাসায় নকল (?)


ভেজালের সঙ্গে আমরা কম-বেশি সবাই পরিচিত। খাদ্য-বস্ত্র-যন্ত্র-প্রসাধন সব কিছুতেই এখন ভেজাল। এমনকি গুঁড়ো দুধেও। ভেজালের রাহুগ্রাস থেকে বাদ যায়নি স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি বা আলিয়া মাদ্রাসাগুলোও। তবে একটি কথা খুব দুঃখের সঙ্গে বলছি, শুনলে অবাক হতে হয় যে- এখন কওমি মাদ্রাসাগুলোতেও ভেজাল ঢুকে পড়েছে। যদিও কওমি মাদ্রাসার ছেলেদের কর্মসংস্থান মসজিদ-মাদ্রাসা ছাড়া কোথাও নেই। তারপরও দেখা যায়, অনেক কওমি মাদ্রাসায় পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় কোনও গার্ড দেয়া হয় না। ভেতরেও থাকে শিথিল অবস্থা। যার কারণে
অসৎ ছেলেরা নকল করে পার পেয়ে যাচ্ছে খুব সহজেই। ভালো রেজাল্ট করছে। অথচ এরা বছরজুড়ে পড়াশোনায় অমনোযোগী ছিল। ফলে প্রতিবছর অনেক অবাঞ্ছিত ছাত্র মিথ্যা সার্টিফিকেটে আলেম-মাওলানা হয়ে যাচ্ছে। সমাজে তারা হয়তো কোনও মাদ্রাসায় টিচার হিসেবে নিয়োগ পাবে। শিক্ষার্থীদের ভুল শিক্ষায় মূর্খ-ধর্মান্ধ বানাবে অথবা কোনও মসজিদে ইমামতি করবে। মানুষকে ভুল মাসআলা শোনাবে। কথায় কথায় বানোয়াট ফতোয়া দেবে, কখনও দেখা যাবে, এদেরই কেউ ধর্মীয় কোনও বৈঠকে বা কোনও গ্রাম্য সালিশে অথবা কোনও মসজিদের বারান্দায় ধর্মের মাথা খেয়ে অসহায় কোনও নারীকে চাবুক মারার হুকুম দিচ্ছে। এদের কারণেই আজ বিশ্ব দরবারে এই সোনার বাংলাদেশ ‘ফতোয়াবাজের দেশ’ ও ‘দোররা মারার দেশ’ নামে কলংকিত। কিন্তু এর দায় নিতে হচ্ছে সব আলেমকে। সেই দুঃখ রাখব কোথায়? মান-মর্যাদা যা যাওয়ার গেছে। এখনও মানুষ আলেমদের শ্রদ্ধার চোখে দেখে। কিন্তু আমরা আলেমরা নিজেরাই নিজেদের মূল্য বুঝি না। সময় চলে যায়নি। আমরা যদি এখনও এ ব্যাপারে সচেতন না হই, পরীক্ষার হলে নকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিই, সৃজনশীল শিক্ষার প্রতি ছাত্রদের দৃষ্টি আকর্ষণ না করি, তা হলে অচিরেই সত্যিকার আলেমের সংখ্যা কমে যাবে এবং আলেম নামধারী কিছু অসৎ লোক সমাজে নানারকম বিভ্রান্তি ছড়াবে। এতে করে ধর্মান্ধতা চরমভাবে বৃদ্ধি পাবে। জঙ্গিবাদ আরও সক্রিয় হয়ে উঠবে। দেশ জ্বলতে থাকবে ধর্মান্ধতার আগুনে। মূর্খতার দরুন ধর্ম তখন বিপদ হয়ে দেখা দেবে। মানুষ ধর্মবিমুখ হয়ে যাবে।

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন