YouTube বন্ধ হয়ে গেলে...

বেশ কিছু দিন যাবৎ বাংলাদেশে ইউটিউব বন্ধ ছিল। কিন্তু তাই বলে আমাদের প্রয়োজন শেষ হয়ে যায় নি। নিজেদের প্রয়োজনের স্বার্থে বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে উপায় বের করে নিয়েছি।

তুমি নেই তাই

পরমিতা.. হয়তো বা আজ রাতে.. হয়তো বা তোমায় একটা চিঠি লিখতে পারি। তোমার অবর্তমানে আমার অনুভূতিগুলো সাজাবো তাতে।।

বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৬

দিনলিপি-২




আজ সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে জানতে পারলাম, আমাদের বাড়িওয়ালার কাজের ছেলেটা পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে বাড়ির মালিক স্থানীয় থানায় একটি জিডি করেছে। এই বাসায় আমরা উঠেছি প্রায় দু’বছর হতে চলল। দু’বছরে তার কাজের ছেলে এ নিয়ে চারজন গেছে। সুজন ছিলো বাড়িওয়ালার চতুর্থ জন। বয়স কতো, আট-নয় বছর হবে হয়তো। এই বয়সে ওর স্কুলে যাবার কথা। শুনেছি সে বাড়িওয়ালার চাচাতো বোনের খালাতো বোনের ছেলে। দারিদ্রের কষাঘাতে আজ তাকে মামার বাসায় পরিচারকের কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু পালিয়ে গেলো কেন! জানা গেলো, কয়েকদিন পূর্বে ওদের বাসার কেউ একজন ওকে লাথি মারে। আঘাতটা লাগে ওর কনুইয়ে। মচকে গেলো, না ভেঙ্গে গেলো তার খবর নেওয়ার কে আছে ওর! ওষুধ কি সেবন করতে দিয়েছিলো ওকে? জানা যায়নি। আজ বিকেলে ও ছাদে গিয়েছিলো। তখন ওর মামি ধমক দিয়ে বলে- এখানে কি করছিস? নিচে যা... ও নিচে নেমে যায়। এর পর হতেই নাকি ওর কোনও খোঁজ নেই। অনেকেই মনে করছে, কেউ হয়তো ওকে নিয়ে গেছে।

১৯ এপ্রিল, ২০১৬
রাত ১:২৫

আজ মহান প্রাণ প্রয়াত ঋষি ব্লগার ইমন জুবায়ের এর ৪৯তম জন্মবার্ষিকী : আমি ভাবছি – জ্যোৎস্না রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন?



ইমন জুবায়ের
জন্ম: ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৭ – মৃত্যু: ৪ঠা জানুয়ারি, ২০১৩

শুরুতেই বলে রাখা ভালো- বাংলা ব্লগের অন্যতম নক্ষত্র ইমন জুবায়ের ভাইকে নিয়ে ইতোপূর্বে অনেক লেখা হয়েছে। তবু তাঁকে নিয়ে লেখার সামান্য প্রয়াস পেতে আমাকেকিংকর্তব্যবৈমূঢ়ে ভুগতে হয়েছে। যতোটুকু লিখতে পেরেছি, তা তাঁর স্মারক হিসেবেই থাকুক।

পুরো নাম- জুবায়ের হোসেন ইমন। ‘ইমন’ তাঁর মেজোমামার দেয়া ডাকনাম। পরবর্তীতে ইমন জুবায়ের নামেই তিনি পরিচিত। তাঁর বাবা আবদুল মালেক পাটোয়ারী একজন আইনজীবী ছিলেন। মা- নুরুন্নেসা হামিদা বেগম, তিনি ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষিকা।চার বোন ও এক ভাই হলেও ইমন ভাই আর স্বাতী দু’জন পিঠাপিঠি ছিলেন।
শৈশব কাটে তাঁর নানাবাড়িতে। তিনি অবশ্য নানীর বাড়ি বলতে ভালোবাসতেন। কিশোর বয়সে তিনি ছিলেন খুব চঞ্চল প্রকৃতির। জলপাই গাছ বেয়ে বাড়ির ছাদে ওঠা, হরবরি গাছে উঠে দেয়াল টপকানো আর বন্ধুদের নিয়ে শহরময় ঘুরে বেড়ানো ছিলো তার নিত্যদিনের ব্যাপার। ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র তাঁর নজর কাঁড়তো। ফুটবল তাঁর প্রিয় খেলা। তিনি ছিলেন একজন সফল গোলরক্ষক। শূন্যে উড়ে বল গ্রিপ করার নৈপুণ্যে তাঁর খুব নাম ডাক ছিলো। বল ছিঁটকে বেরিয়ে আসার আগেই বুঝতে পারতেন বল কোন দিকে যাবে। তিনি মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাপোর্টার ছিলেন। এছাড়া ক্রিকেটও ভালো খেলতেন তিনি। তিনি স্পিন বলার হলেও অনায়াসেই বল তালুবন্দি (ক্যাচ) করতে পারতেন। প্রিয় দল বাংলাদেশ, তারপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ছেলেবেলার বন্ধু পাড়ার গৌতম, শাকিল ও পার্থ। শৈশব থেকেই তিনি গান শনতে পছন্দ করতেন।

একা

সিমেন্টের তৈরী ছোট বেঞ্চিটা খালি পড়ে আছে।
একটু আগেও তাতে কেউ বসে ছিলো। একটা ছেলে।
বাদামের খোসাগুলো বড়ো নির্লজ্জ। ছড়ানো-ছিটানো।
রোদ্রের তাপ আর কতোক্ষণ থাকবে! বাতাসে শীতল অনুভব ধীরে ধীরে বাড়ছে। অনেকটাই থেমে গেছে কোলাহল।
সূর্যের স্থানটা বুঝি চন্দ্র এসে দখলে নেবে একটু পরেই।


নিঃসঙ্গ বেঞ্চিটার সামনে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে পানি আর পানি।
ঝিরিঝিরি বাতাসে ঈষৎ কম্পিত পানির ক্রমাগত ছোট ঢেউয়ের দল এক কথায় দারুণ..
পশ্চিমের আকাশে অনেক চিল জমা হয়েছে আজ।
যেনো লাল-হলুদের মাঝে কালোর মেলা বসেছে।

ক্লেশ

http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/ikhtamin/04-2015/ikhtamin_115418087552b69b5707ad8.74076390_xlarge.jpg

রোমেন একটা জরুরি ফোন করবে এমন সময় তার মুঠোফোনটা বেজে উঠলো।
- হ্যালো, মা! কেমন আছেন?
- এইতো আছি। ভালা। তুঁই কেমন আছো?
- আমি ভালো আছি।
- দুপুরে খাইছো নি?
- হ্যাঁ খাইছি। আপনি খাইছেন?
- হ। আর হুনো... লামিসার কোনও খবর জানো নি?
- হ্যাঁ... এক ঘন্টা আগেও তো কথা হইছে, বললো ভালোই আছে।
- আর কিছু কয় নো?
- বলছে। গতকাল নাকি তাহমিনার কাছে অনেক বার কল দিছে। কেউ রিসিভ করে নাই। পরে ব্যাকও করে নাই কেউ। আজকে ফোন করে দেখে কল ওয়েটিং। কেমন মানুষ। আমি বাড়িতে গেলে ওদের বাড়ি বেড়াতে যাবার জন্য শতবার ফোন করে, অথচ এতোদিন হয়ে গেলো আমাদের কাছে ফোন করাতো দূরের কথা, কল দিলেও ধরে না। ওকে। আমরা আর কল করবো না। লামিসারেও বলে দিছি- আর যেনো কল না করে ওর কাছে।

পোড়া মাটি


মা.. ওমা.. উঠো। ভাত দু’টা খেয়ে নেও। আমি পানি নিয়া আসি” বলে পুষ্পা কলসি হাতে কলপাড়ের দিকে হেঁটে গেলো। আজ চারদিন পর জ্বরাক্রান্ত কমলা দেবী ধীরে ধীরে তিক্ত খাবার খেতে শুরু করলো। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সদানন্দ বাবু কিছু ট্যাবলেট এনে দিয়েছিলো। তা-ও প্রায় শেষের দিকে। জ্বর কিছুটা কমলেও শরীর খুব শীর্ণ হয়ে পড়েছে। কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া দৃশ্যগুলো তার চোখের সামনে ভাসছে। নিজের অজান্তেই কমলা দেবী'র মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো- এটাই কি ছিলো আমার কপালে? একই সাথে তার শরীর কেঁপে কেঁপে ওঠে। যেন ভয় পেয়ে শিউরে উঠছে।

জানোয়ার

বাতাসের শোঁ-শোঁ গর্জনের মাঝেও অন্য কিছুর শব্দ আমার কর্ণকুহরে প্রবেশ করছিলো। মধুর আওয়াজ নয়, আশার বাণীও নয়, নয় কোনও মানুষের কথা। অথচ তা কোনও পাখির ভাষাও ছিলো না। আশেপাশে কতোগুলো পোকামাকড় ছিলো। ওগুলোর হাতে বিষ, পায়ে বিষ, বিষ ওগুলোর মুখে; সর্বশরীরে। চারিদিকে ওদের ছুটোছুটির শব্দ অত্যন্ত ভয়ংকর শোনা যাচ্ছিলো। চারিধারে ওরা লম্ফঝম্ফ করে বিষ ছুড়ছিলো। এই জগৎটা যেনো কেবলই ওদের, অন্য কারও বাস করার অধিকার নেই এতে।

সেভ প্যালেস্টাইন

তুমি যুদ্ধগ্রস্ত; আবহ বন্দি
এক টুকরো নির্মল বায়ুর খোঁজে ছুটছো
মৃত্যুর পথে ধাবমান, মরণ তোমার পিছু
নিঃশ্বাসে পাও বারুদ পোড়া
অনিল ভাসায় রক্ত পচা, বিঁধছে বুকে বুলেট।

ঢেউ তুলে হাওয়ায় দুলে কাশবনের মাথায়
আকাশের বুকে এক ছোপ নীল মেখে
তব প্রাণখানি সাদা বক সেজে উড়ে যায়
কে জানে- কোথায়, কার হিয়ায়, কোন অজানায়।

বিশ্বে আজ ঈদের হর্ষ-হাসি
দামি কাপড়, নতুন জামা-জুতো
তোমার দেহে পুরান ছেঁড়া সুতো
ঈদটা তোমার বড়ই কটু বাসি।

২৯ জুলাই, ২০১৪

পূর্বপুরুষ

প্রবল বাতাসের বিপরীতে সদা দন্ডায়মান একটি দেয়াল। নির্বিকার।
ফ্যাকাসে আবরণ তার শরীরে, বয়স অনেক।
কতো নির্ঘুম রাত্রি পার করেছে এই দেয়াল, তার হিসেব ঈশ্বরই লিখে রেখেছেন।
অনেক দীর্ঘ এবং সরু।
শত ঝড়-ঝঞ্জায় অনেক জায়গায় তার আস্তর খসে পড়েছে
তবে একটি স্থানে আঁচড় লাগেনি এক চুলও।
কে জানে, কতো যুগ কেটে গেছে এইভাবে...
এক আলোক বর্ষ হবে তো!
দেয়ালের ঠিক মাঝখানে
মাঝ দেয়ালে একটা কাঠের ফ্রেম লেপ্টে আছে।
কারিগর তার সুনিপুণ হস্তে পরম মমতায়
ফ্রেমটা বসিয়েছে খুব যতনে।

অপেক্ষা

বিনিদ্রা
মন খারাপের পাখি
আমার দুঃখ রাতের সাথী
প্রত্যহ তোমাকে বিদায় জানাই। প্রভাতে
দূর গ্রামের রেল- কৃষ্ণকায়া গ্রহণ করে না তোমায়
নাকি তুমি অনেক পথ পাড়ি দিয়ে ক্লান্ত- পরিশ্রান্ত
তাই স্টেশনের দেখা পেয়েছো অনেক দেরিতে
ভোরের ট্রেন যে ছেড়ে গেছে অনেক আগেই
গন্তব্যহীন পথিকের মতো
উদ্দেশ্যহীন, পড়ন্ত বিকেলে
আমার আবাসে, ফের রাত্রি পেরোতে।

শূণ্য গৃহের আতিথ্য মন্দ কী হে
আমার অতিথি; বিজন রাতের পাখি
প্রতিদিন
আর ফিরবেনা বলে চলে যাওয়া
তবুও সন্ধ্যায় ফিরে ফিরে আসা।