শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৩

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী!!! আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন?

প্রথম প্রকাশ- ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১৫ | 

সামহোয়্যারইন ব্লগ

 

শাহবাগের আন্দোলন চলাকালীন সময়ে লেখা


            আমরা রাজাকারের ফাঁসি চাই ...
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
শুক্রবার আমার অফিস ছুটি। তাই আজ আর সন্ধ্যায় যেতে হয়নি। দুপুরেই প্রজন্ম চত্বরে গেলাম। আজ অন্যদিনের তুলনায় অনেক অনেক বেশী মানুষ এসেছে। তারা এসেছে। রাজাকারের ফাসিঁর দাবী নিয়ে। এখানে অনেক বৃদ্ধ এসেছেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধা এসেছেন। এসেছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানরা। অনেক স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চারা এসেছে। কলেজ-ভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীরা এসেছে। এখানে এসেছেন অনেক গৃহবধু তার কোলের বাচ্চাটিকে নিয়ে। শ্রমজীবি, পেশাজীবি, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ সরকারী চাকুরীজীবি পর্যন্ত সর্বস্ততরের মানুষ আজ এখানে জমায়েত হয়েছেন। চরমপত্র পাঠের মধ্য দিয়ে মহাসমাবেশ শুরু হয়েছে। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছেন তারা।


প্রজন্ম চত্বর সহ সারাদেশে উত্তপ্ত দুপুরে- খোলা আকাশের নিচে পীচঢালা রাস্তায়- প্রখর রোদে শরীর জ্বালিয়ে অথবা মাঘ মাসের এই হিম শীতল গভীর রজনীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ যেই দাবী নিয়ে এসেছে- যা আজ কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়েছে।

সেই কারণেই আজ আমার এই আহবান।
> মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! আমি আপনাকেই বলছি... আমার এই ডাক আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন?...
> আপনি কি জানেন- এখন দেশের মানুষ সরকারের কাছে কী প্রত্যাশা করে?
> একবারও কি ভেবেছেন- কেনো তারা আজ কাজ-কর্ম ফেলে বাড়ীঘর ছেড়ে রাজপথে নেমেছে?
> কারণ, আজ আপনি ইতিহাসের কোনও এক সন্ধিলগ্ন অতিক্রম করছেন। গত চার দশক ধরে বাঙগালী জাতির কপালে যেই কলঙ্কের কালিমা লেপ্টে ছিল- আজ তা ধুয়ে মুছে ফেলার সময় এসেছে। হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সুযোগও রয়েছে। জাতি এতোদিন যেই মাহেন্দ্র ক্ষণের প্রতীক্ষায় ছিল- আজ তা সকলের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। আর আপনি সেই সৌভাগ্যবান শান্তির দূত- যার সময়ে এই ঐতিহাসিক সুযোগটি হাতে এসেছে। যুদ্ধাপরাধী কিংবা রাজাকারের ফাঁসির দাবী আজ প্রকট হয়েছে।



> এটি কোনও ব্যক্তিগত বা পারিবারিক দাবী নয়। কোনও দলীয় অথবা গোত্রীয় দাবী-ও নয়। এটি নয় কোনও ধর্মীয় কিংবা সাম্প্রদায়ীক দাবী। বরং এটি আজ একটি সামগ্রিক তথা জাতীয় দাবীতে পরিণত হয়েছে। অপর দিকে কোটি কোটি জনতার এই কাঙ্খিত দাবী পূরণের লক্ষ্যে, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার প্রশান্তির তরে, বাঙ্গালীর ললাটের সেই কলঙ্কময় দাগ মোচনের জন্য আপনার হাতে আজ রয়েছে প্রচুর ক্ষমতা, পর্যাপ্ত সময়, অপরিমেয় সুযোগ। এবং আপনার পক্ষে রয়েছে আজ সাধারণ জনগণের যথেষ্ট সহযোগিতা।

> কিন্তু আপনি কি একবার ভেবে দেখেছেন- মহাকালের এই সন্ধিবিন্দুতে দাঁড়িয়ে আজ আপনি ১৬ কোটি মানুষের সেই ঐতিহাসিক দাবী পূরণ করে, জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে চান? যা ইতিহাসের সোনালী পাতায় হাজার বছর ধরে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। নাকি এই মহা-মূল্যবান সময়-সুযোগকে মূল্যায়ন না করে- হতভাগা এই বাঙ্গালী জাতিকে চিরদিন এই কলঙ্কের বোঝা বইয়ে বেড়াতে বাধ্য করবেন? যা মহাকালের পাতায় পাতায় ক্লেদাক্ত আর গ্লাণিমাখা কালিমায় কদর্য হয়ে থাকবে? আশা করি আপনি একবার নয়- শতবার ভেবে দেখবেন।



তবুও আমি জানিনা- আকাশের পানে আর কত লক্ষবার শ্লোগান তুলিলে, আর কত দিন শরীরটাকে রোদে পোড়াইলে, আর কত রজনী শীতে জমিয়া থাকিলে পরে রাজাকারের ফাঁসি দেখিতে পাইবো ... ... ...

০৮.০২.২০১৩ খ্রী.

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন